Friday, August 14, 2020

Why wine is forbidden in earthly life? - --জান্নাতে মদ জায়েজ হলেও দুনিয়াতে কেন হারাম?

 প্রশ্নটি জানার জন্য করে থাকলে ঠিক আছে কিন্তু আল্লাহর হুকুমকে চ্যালেঞ্জ করে প্রশ্ন করলে তা হবে দৃষ্টতা। আল্লাহ যেকোন জবাবদিহি থেকে পবিত্র। তিনি কাউকে হিসাব দেন না হিসেব নেন।


দুনিয়াতে 'মদ্যপান' কেন হারাম?


মদ হল সমস্থ খারাপের মা। এর দ্বারাই সমস্থ খারাপ জন্ম নেয়। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টির সেরা হিসেবে তৈরি করেছেন এবং তিনি জানেন কোন জিনিসের মধ্যে মানুষের কল্যাণ আর কিসের মধ্যে মানুষের অকল্যান? এইজন্য তিনি পৃথিবীতে মানুষের জন্য মদ পান নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন, কারন মানুষের এই ক্ষমতা নেই,মদের মধ্যে যে অসংখ্য খারাপ দোষ আছে তা পরিশুদ্ধ করে মদ তৈরি করা, এজন্য এই মদ খেলে মানুষ পশুর চেয়ে নিম্নস্তরে চলে যায় যখন মনুষ্যত্ব শেষ হয়ে যায় তখন তাকে দিয়ে যেকোন অপকর্ম করানো যায় আর শয়তান সেই সুযোগটা (ব্যভিচার, জুয়া, খুন, অশ্লীলতা) নেয়।


আর জান্নাতের মদকে আল্লাহ তায়ালা বিশেষভাবে তার নেক বান্দাদের জন্য তৈরি করেছেন যাতে কোন দোষ নেই যার মধ্যে আছে শুধু উপকারই উপকার। যা পৃথিবীর মদের সমস্থ দোষ থেকে পাক। আল্লাহ মানুষের জন্য জান্নাত রেখেছেন পবিত্র উপকারী মদ আর আমরা মানুষেরা পছন্দ করি নাপাক দোষ যুক্ত মদ যার মাধ্যমে আমরা তাড়াতাড়ি মৃত্যুকে ডেকে আনার চেষ্টা করি।


চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলেন শুধু মদ পানের কারনেই মানুষ যে সমস্থ রোগে আক্রান্ত হয় তার কিছু নিচে উল্লেখ করা হলঃ


১. যকৃৎ বা কলিজা শুকিয়ে শক্ত হয়ে যাওয়া। যা লিভার সিরোসিস নামে পরিচিত।


২. অম্লনালীর ক্যান্সার এবং মাথা, গলা, কলিজা ও মল নালীর ক্যান্সার।


৩. অগ্ন্যাশয় ও যকৃতের প্রদাহ।


৪. হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বা হৃদয় স্পন্দন সংক্রান্ত যাবতীয় রোগ, হাইপার টেনশান।


৫. হৃৎপিন্ডে রক্ত সঞ্চালেন নালী সমূহের যাবতীয় রোগ, গলনালী প্রদাহ এবং হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া।


৬. পক্ষাঘাত, সন্যাস রোগ এরকম আরো অন্যান্য প্যারালাইসিস।


৭. স্নায়ু ও মস্তিষ্কের যাবতীয় রোগ।


আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন,


"শয়তান তো মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতাও ঘটাতে চায় এবং তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণে ও সালাতে (নামাজে) বাধা দিতে চায়। তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?" (সূরা মায়িদাহ, আয়াত : ৯০-৯১)


আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন,


"তারা আপনাকে মদ, জুয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করে আপনি বলুন উভয়টিতে রয়েছে মহাপাপ "।


(সূরা বাকারা, আয়াত ২১৯)


আল্লাহপাক আরও বলেন,


" হে ঈমানদারগণ নিশ্চয় মদ, জুয়া, পূজার বেদি, লটারি ইত্যাদি ঘৃণিত ও শয়তানের কাজ, তোমরা এ থেকে বিরত থাকলে সফল হবে"। (সূরা মায়িদা, আয়াত ৯০)


মদ মদিনায় নিষিদ্ধ করা হয় এর আগে নিষিদ্ধ ছিল না, যখন মদ নিষিদ্ধের আয়াত নাযিল হয় তখন মদিনার লোকজন মদের পাত্রগুলো ভেঙে ফেলে, ঘরের বাহিরে নিক্ষেপ করে এবং শরাবখানাগুলো ধ্বংস করে দেয়। তখন মদিনার অবস্থা এমন হয় যে, অলিগলি সর্বত্র পানির মতো মদ প্রবাহিত হয়।মনে হয় যেন ছোট খাট বন্যা। এর দ্বারা সমগ্র আরব এই দুর্গন্ধ যুক্ত বস্তু হতে মুক্ত হয়ে যায়।


কিয়ামতের পূর্বে মদ/মাদকতা এমনভাবে বৃদ্ধি পাবে যে মদ পানকারীরা তা পান করাকে অপরাধ মনে করবে না।


হাদিসে এসেছে, আনাস (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, 'কিয়ামতের আলামতসমূহের মধ্যে রয়েছে, ইলম উঠে যাবে, মূর্খতা, ব্যভিচার ও মদ্যপান বেড়ে যাবে। পুরুষের সংখ্যা হ্রাস পাবে এবং নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে। শুধু তাই নয়, শেষ জামানায় মানুষ মদকে বিভিন্ন নামের ছদ্মাবরণে পান করবে বলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন। (এখানে একটা কথা বলি আমাদের দেশে যে এনার্জি ড্রিংক পাওয়া যায় তার মধ্যে  এলকোহল আছে কি?)


মাদকদ্রব্যের ব্যবসাও হারাম,


মুসলিমদের জন্য মদ, হেরোইন ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করা হারাম। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, "নিশ্চয়ই আল্লাহ মদপান, তা ক্রয়-বিক্রয় ও এর বিনিময় হারাম করেছেন"।


মাদক ও মাদকাসক্তির সাথে সম্পর্ক রাখে এমন ১০ শ্রেণির লোকের প্রতি রাসূল (সাঃ) অভিশাপ করেছেন। হযরত আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,


১. যে লোক মদের নির্যাস বের করে। ২. প্রস্তুতকারক। ৩. মদপানকারী। ৪. যে পান করায়। ৫. মদের আমদানিকারক। ৬. যার জন্য আমদানি করা হয়। ৭. বিক্রেতা। ৮. ক্রেতা। ৯. সরবরাহকারী এবং ১০. মাদক ব্যবসায় লভ্যাংশ ভোগকারী।


(মুসনাদে আবি হানিফা, হাসকাফির বর্ণনা, হাদিস : ৩৫)


মাদক বিষয়ে নবী (সাঃ)-এর অসংখ্য বাণী রয়েছে। তিনি বলেছেন, মাদক গ্রহণকারী জান্নাতে যাবে না (ইবনে মাজাহ)


" আমার উম্মতের একদল লোক মদ পান করবে তারা মদকে অন্য পানীয়ের নামে নাম পরিবর্তন করে পান করবে। নেতাদের গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে সম্মান দেখানো হবে। যখন এ দিন আসবে তখন ভূমিধস, বানর, শূকরের মতো আকৃতি বিকৃতি হবে"। (বুখারি-ইবনে মাজাহ)।


হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আরো বলেন,


“ আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তি মদ পান করবে আল্লাহ তায়ালা তার থেকে চল্লিশ দিন পর্যন্ত কোন নামায ক্ববুল করবেন না”। (সিলসিলাতুস সহিহা) অর্থাৎ মাদক ও ইসলামের ইবাদত একসাথে চলতে পারেনা।


তিনি (সঃ) আরো বলেন,


“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন এমন খাবারের বৈঠকে না বসে যেখানে মদ পরিবেশন করা হয়”।


( আহমদ)


নবী করীম (সাঃ) বলেছেন: আমার উম্মতের মাঝে অবশ্যই এমন কতগুলো দলের সৃষ্টি হবে যারা ব্যাভিচার, রেশমী কাপড়, মদ ও বাদ্য যন্ত্রকে হালাল জ্ঞান করবে।


(বুখারী ৫১৭৬)


এমন সকল বস্ত, যা নেশাগ্রস্ত করে অনেক পরিমাণে তা নিষেধ (হারাম)।এমনকি তা অল্প পরিমাণ গ্রহণ করা হলেও। তাই এক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই। তা এক ঢোক অথবা এক ড্রাম।


মদ পান করা অবস্থায় মদ পানকারী কোন মুসলিমের ঈমান থাকেনা। অতএব যদি এ অবস্থায় মৃত্যু এসে যায় তাহলে তাকে বে-ঈমান হয়ে মরতে হবে।


কেননা হাদীসে এসেছে: আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন: নবী করীম (সাঃ) বলেছেন: ব্যভিচারী ব্যাভিচারে লিপ্ত থাকা অবস্হায় ঈমানদার থাকেনা, মদ পানকারী মদ পান করার সময় ঈমানদার থাকেনা এবং চোর চুরি করার সময় ঈমানদার থাকেনা।


(হাদীসটি বুখারী (২৪৭৫,৫৫৭৮,৬৭৭২), মুসলিম (৫৭), তিরমিযী (২৬২৫), নাসাঈ (৪৮৭০,৪৮৭১), আবূ দাঊদ (৪৬৮৯), ইবনে মাযাহ (৩৯৩৬), আহমদ (৭২৭৬) ও দারেমী (২১০৬)


আখেরাতে মদ পানকারীর শাস্তি


জাবের (রাঃ) হতে বর্নিত রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "সকল প্রকার মাতালকারী বস্তু হারাম। আর আল্লাহ এ অঙ্গীকার করেছেন যে, যে ব্যক্তি মাতালকারী বস্তু পান করবে তিনি তাকে তীনাতুল খাবাল ভক্ষন করাবেন। তারা বলল: হে আল্লাহর রাসূল! ত্বীনাতুল খাবাল কি? তিনি বললেন: জাহান্নামীদের ঘাম অথবা জাহান্নামীদের থেকে নির্গত দুর্গন্ধযুক্ত নিকৃষ্ট রস।


(হাদীসটি ইমাম মুসলিম (২০০২) ও নাসাঈ (৫৭০৯) বর্ননা করেছেন)


No comments:

Post a Comment

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করলে কি হবে?

সৌদি আরবে আজ রবিবার ইদুল ফিতির। আর আমাদের দেশে ইনশাল্লাহ সোমবার ঈদ উদযাপিত  হবে।  আজ বাংলাদেশের কিছু এলাকায় ঈদ উদযাপিত হবে। তারা সৌদি আরবের ...