বেইজিংয়ের বেটাবল্ট কোম্পানি 3v এর একটা নিউক্লিয়ার ব্যাটারী উৎভাবন করেছে যাতে শক্তির উৎস হিসেবে নিকেল -৬৩ তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহার করা হয় এবং এনার্জি কনভার্টার হিসেবে ডায়মন্ডের সেমিকন্ডাক্টর ব্যবহার করা হয়।
বেটাবল্ট এই ব্যাটারির নাম দিয়েছে BV100। বেটাবল্ট চেয়ারম্যান এবং সি ইউ জাং উই বলেন এই ব্যাটারি প্রথম প্রথম ৩ ভোল্ট এর হবে এবং ১০০ মাইক্রো ওয়াট পাওয়ার সাপ্লাই দিবে। এই জন্যই এর নাম BV100 দেয়া হয়েছে। এই ব্যাটারির সাইজ হলো ১৫x১৫x৫ মি.মি. যা ছোট একটা কয়েনের চেয়েও ছোট হবে।
নিউক্লিয়ার ব্যাটারীকে radioisotope thermoelectric generator বলা হয়। অর্থাৎ তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ তার নিউক্লিয়ার ক্ষয় বা nuclear decay এর মাধ্যমে যে তাপমাত্রা রিলিজ করে বা নির্গত করে সেই তাপমাত্রার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়।
বেটা ভোল্টের বিজ্ঞানীরা নিউক্লিয়ার ব্যাটারি তৈরি করার জন্য তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ হিসাবে নিকেল -৬৩ ব্যবহার করেন যেই তেজস্ক্রিয় আইসোটোপটি এনার্জির প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে এবং সেখানে ডায়মন্ডের অর্থাৎ হীরকের দুটি সেমিকন্ডাক্টর ব্যবহার করা হয় energy কনভার্টার হিসেবে।
বেটাবল্ট ২০২৫ সালের মধ্যে এই ব্যাটারি বাজারে আনতে চায়। এই ব্যাটারি কোন চার্জ করা ছাড়াই ৫০ বছর চলবে, অর্থাৎ স্মার্টফোনে একবার এই ব্যাটারি ব্যবহার হলে ৫০ বছরের মধ্যে আর কখনো চার্জ দিতে হবে না, এই ব্যাটারি ব্যবহৃত ড্রোনগুলো সব সময় উড়তে থাকবে কিন্তু কোন চার্জ দিতে হবে না। অবিশ্বাস্য ঘটনা ।
এই ব্যাটারির সুবিধা হলো
সাধারণ ব্যাটারি গুলি যেরকম কম বা বেশি তাপমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিন্তু BV100 ব্যাটারি যেমন অনেক নিম্ন তাপমাত্রা সহ্য করতে পারবে আবার অনেক উচ্চ তাপমাত্রাও সহ্য করতে পারবে। অর্থাৎ তাপমাত্রার তারতম্যে কোন ক্ষতি হবে না । বেটা ভোল্ট দাবি করে যে তাদের এই ব্যাটারি সর্বনিম্ন -60° c তাপমাত্রা থেকে সর্বোচ্চ ১২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে ব্যবহার করলে কোন সমস্যা হবে না। এই ব্যাটারীতে আগুন ধরবেনা বিস্ফোরণ ঘটবেনা এমনকি বন্দুকের গুলিতেও এর থেকে কোন তেজস্ক্রিয়তা বের হবে না । অর্থাৎ হান্ড্রেড পার্সেন্ট নিরাপদ
বেটা ভোল্ট এর বক্তব্য তাদের এই ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী হবে যা বিভিন্ন যন্ত্রপাতিতে ব্যবহার করা যাবে যেমন মহাকাশ গবেষণায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইকুইপমেন্টএ, চিকিৎসা জাতীয় যন্ত্রপাতিতে, মাইক্রোপ্রসেসর এর মধ্যে, বিভিন্ন রকমের সেন্সরে, ছোট ড্রোনে এবং পানির নিচে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি বা ছোট ড্রোনেও এই ব্যাটারি পানির নিচে ব্যবহার করা যাবে । BV100 ব্যাটারি মানবদেহের কোন ক্ষতি করবে না এবং মানুষের শরীরের ভিতরেও ব্যবহার করা যাবে যেহেতু এ থেকে কোন রেডিয়েশন নির্গত হবে না। তাই পেসমেকার এর মধ্যে এই ব্যাটারি ব্যবহার করা যাবে। বেটা ভোল্টের নিউক্লিয়ার ব্যাটারী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহারে যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটাবে।
BV100 ব্যাটারিগুলো পূর্বের নিউক্লিয়ার ব্যাটারী থেকে অনেক উন্নত হবে ,কারণ সে সময়ের নিউক্লিয়ার ব্যাটারী আকারে অনেক বড় ছিল,ওজন ছিল অনেক বেশি,ব্যবহারে বিপদজনক ছিল,ব্যবহারের সময় গরম হত এবং সর্বোপরি অনেক ব্যয়বহুল ছিল। সে ব্যাটারীতে তেজস্ক্রিয় ধাতু হিসেবে plutonium ব্যবহার করা হতো স্বাভাবিকভাবেই প্লুটোনিয়াম অনেক তেজস্ক্রিয় একটা ধাতু কিন্তু betavolt এর ব্যবহৃত আইসোটোপ হলে নিকেল ৬৩ যা প্লটোনিয়ামের মত অত বেশি তেজস্ক্রিয় না।
বেটা ভোল্টের বিজ্ঞানীরা বলেন তাদের ব্যাটারি গুলি পরিবেশবান্ধব হবে কেননা কেননা এই নিকেল ৬৩ তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ক্ষয় হতে হতে এক সময় স্টেবল আইসোটোপ হিসেবে কপার এ রুপান্তরিত হবে যা পরিবেশের কোন ক্ষতি করবে না কেননা কপার বা তামা অতেজস্ক্রিয় ধাতু । ভবিষ্যতে বেটা ভোল্টের bv100 ব্যাটারি ব্যবহারের
ফলে বিভিন্ন যন্ত্রপাতিতে চার্জ দেওয়ার ঝামেলা থাকবে না, দামও কম হবে এবং কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ সামনের যে যুগ আসতেছে সেই যুগ হবে নিউক্লিয়ার ব্যাটারির যুগ।
No comments:
Post a Comment