দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে সহিংস রক্তক্ষয়ী সামরিক সংঘাত। মিত্রশক্তি আর অক্ষশক্তি সৃষ্টির মাধ্যমে দুইটি বিপরীত সামরিক জোটের সৃষ্টি হয় ৷ তৎকালীন বিশ্বের সকল পরাশক্তি এবং বেশিরভাগ রাষ্ট্রই এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং এই মহাযুদ্ধকে ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্তৃত যুদ্ধ বলে গন্য করা হয়, যাতে ৩০টি দেশের সব মিলিয়ে ৯ কোটিরও বেশি সামরিক সদস্য অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ খুব দ্রুত একটি সামগ্রিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
১৯৩৯ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করে জার্মানি।
জাপান ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট আত্মসমর্পনের ঘোষণা দেয় যার ফলে ১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলা বন্ধ হয়।
১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত এই ছয় বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৭.৫ কোটি মানুষ মারা গিয়েছিল।
২য় বিশ্বযুদ্ধে ৭৫ মিলিয়ন বা ৭.৫ কোটির বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল, যা বিশ্বের জনসংখ্যার ৩%-এরও বেশি। এর মধ্যে আনুমানিক ৩৫ মিলিয়ন বা ৩.৫ কোটি ছিল সামরিক কর্মী, বাকিরা ছিল বেসামরিক লোক। ৪০ মিলিয়ন বা ৪ কোটি বেসামরিক লোকের মধ্যে অনেকেই ইচ্ছাকৃত গণহত্যা, গণ-বোমা হামলা, রোগ এবং অনাহারের কারণে মারা গিয়েছিল।
তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীন সবচেয়ে বেশি হতাহতের শিকার হয়েছিল।
হতাহতের দিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন একক জাতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রাণহানির শিকার হয়েছিল, যার আনুমানিক ২৪ থেকে ২৮ মিলিয়নের মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্ষতিগ্রস্থ দেশ হলো চীন যার প্রায় ২০ মিলিয়ন বা দুই কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীন এর পরে পোল্যান্ডের প্রায় ৫৮ লক্ষ হতাহত হয় যা তার যুদ্ধ পূর্ববর্তী জনসংখ্যার ২০%। জার্মানীর প্রায় ৪২ লক্ষ নাগরিক মারা গিয়েছিল এবং জাপানের প্রায় ২০ লক্ষ লোক মারা যায়। ভিডিও বড় হবে এই কথা ভেবে বাকি দেশগুলির হতাহতের সংখ্যা আলোচনা করা হলো না।
এই যুদ্ধের পরেই সমগ্র ইউরোপ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়; এক অংশ হয় পশ্চিম ইউরোপ আর অন্য অংশ অন্তর্ভুক্ত হয় সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে। পশ্চিম ইউরোপের দেশসমূহের সমন্বয়ে গঠিত হয় ন্যাটো সামরিক জোট । পরবর্তী সময়ে ১৯৯১ সালে এই সোভিয়েত ইউনিয়নই ভেঙে অনেকগুলো ছোট ছোট রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল।
No comments:
Post a Comment