কোলেস্টেরল দেখতে অনেকটা মোমের মতো নরম এক ধরনের ফ্যাট বা চর্বি যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি উপাদান,আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল লিভার বা যকৃত থেকে তৈরি হয়। কোলেস্টেরল পানিতে দ্রবীভূত না হওয়ার কারণে শরীরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত নিজে নিজে চলাচল করতে পারে। এটি শরীরের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে। যেমন : হরমোন তৈরিতে, চর্বিতে দ্রবনীয় ভিটামিনগুলোর পরিপাকে, কোষের মেমব্রেন এবং ভিটামিন ডি তৈরিতে।
ভালো কোলেস্টেরল রক্তনালির পুষ্টি জোগায়, রক্তনালির দেয়ালে চর্বি জমতে বাধা দেয়। আর খারাপ কোলেস্টেরল বাড়লে তা রক্তনালীর দেয়ালে জমতে থাকে। কোলেস্টেরল বাড়তে থাকলে তা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়,শরীর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়।। যার ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনির সমস্যা সহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়।
যেই ১০ টা লক্ষণ দেখলে আপনি নিজে বুঝতে পারবেন যে আপনার শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বাসা বেধেছে
১) জিভের ওপর ছোট ছোট দানার মতো আস্তরণ যখন সারা জিভে ছড়িয়ে পড়ে ও রং পরিবর্তন করে বিবর্ন করে তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
২) উচ্চ কোলেস্টেরলের প্রভাব সবার আগে চোখেই পড়ে। চোখের কর্নিয়ার পাশে ধুসর দাগ দেখা দিলে বা সাদা বা হলুদ রঙের ছোট ছোট আচিলের মত দানা চোখের চারপাশে ভরে গেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়েছে বলে ধরে নিতে হবে।
৩) খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে ঘাড় ও মাথার পেছনে ভীষণ ব্যথা হয় যা অস্বস্তিকর।
৪) নিয়মিত হাত–পায়ের আঙুলে ঝিঁঝিঁ ধরলে বা অল্প হাঁটলেই পা যন্ত্রণা করলে,অবশ লাগলে, রাতে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হলে, এই উপসর্গ খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
দীর্ঘ দিন ধরে কোলেস্টেরল জমার ফলে হৃদযন্ত্রের ধমনীর পথ সরু হয়ে যায়। ফলে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয়। বিশেষ করে দেহের নীচের অংশে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে যার ফলে পায়ে ঝিঁঝি ধরার মতো লক্ষণ দেখা যায়।
৫) কোলেস্টেরল বাড়লে তার প্রভাব নখেও পড়ে।নখের উজ্জ্বলতা হারিয়ে হলুদ হয়ে যায়। কখনো কখনো নখের নীচের দিকে কালো ও বাদামি রঙের রেখাও চোখে পড়ে।
৬) শরীরে তলপেটে মেদ জমতে শুরু করলে উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
৭) খারাপ কোলেস্টেরল বেশি থাকা মানেই বুকে চাপ অনুভব করা, শ্বাসের দৈর্ঘ্য কমে যাওয়া। অর্থাৎ অনেক সময় স্বাস নিতে কষ্ট হবে।
৮) এছাড়াও শিরা ধমনীর ক্ষতি করে দেয় এই রোগ যা আপনার চোখে, মুখে ছাপ ফেলে দেয়।মাড়িতে ব্যথা হওয়া, হাতের অসারতা এবং হাতে ঠান্ডা লাগা ইত্যাদি।
৯) শরীরে উচ্চ কোলেস্টেরল বেশি হলে উচ্চ রক্তচাপের সৃষ্টি হবে। খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীর high blood pressure নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়।
১০) বুকের বাম দিকে ব্যথা ও হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি। রক্তনালিতে কোলেস্টেরল জমে তৈরি হয় ব্লক। এ ব্লকের জন্য রক্তচাপ বাড়ে, দিনের পর দিন রক্তে অক্সিজেনের অভাবে মানুষের শ্বাসকষ্ট হয় এবং হৃৎস্পন্দনের অস্বাভাবিক গতি তৈরি হয়।
আপনার শরীরে কোলেস্টেরল খুব বেশি কিনা তা জানার একমাত্র উপায় হল রক্ত পরীক্ষা। এবং রক্তে যদি কোলেস্টেরল এর মাত্রা ২০০ মিলিগ্রাম পার ডেসিলিটার এর বেশি থাকে তাহলে আপনাকে সতর্ক হতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন আপনার বয়স ২০ বছর হওয়ার পরে একজন ডাক্তারকে দিয়ে আপনার কোলেস্টেরল পরীক্ষা করান। তারপর প্রতি ৪ থেকে ৬ বছর পর পর আপনার কোলেস্টেরল পরীক্ষা করান।
কারো যদি পারিবারিকভাবে উচ্চ কোলেস্টেরলের ইতিহাস থাকে এবং আপনি ৩ টি ঝুঁকির মধ্যে থাকেন তাহলে বছরে ১-২ বার করে আপনার শরীরের কোলেস্টেরলের পরীক্ষা করা উচিত। ঝুঁকি ৩ টি হলো :
১) উচ্চ রক্তচাপ বা high blood pressure
২) অতিরিক্ত ওজন।
৩) ধুমপানের অভ্যাস।
এই ভিডিওর ব্যাপারে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে comments করে জানাবেন।
আজ এই পর্যন্তই!
ভিডিওটিতে একটা like দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন এবং এরকম ভিডিও আরো পেতে চাইলে অনুগ্রহ করে চ্যানেলটি subscribe করুন। আল্লাহ হাফেজ।
No comments:
Post a Comment