Tuesday, March 12, 2024

হলমার্কিং কি? কেন করা হয়?

ভেজালের এই দুনিয়া ক্রেতারা সবাই আতংকিত  তারা যেন প্রতারিত না হয় আর অসাধু  বিক্রেতারা ব্যস্ত কিভাবে ভেজাল সামগ্রী বিক্রি করে বেশি লাভবান হওয়া যায়। আর সেই পন্যটি যদি হয়  সোনা,রুপার মত মূল্যবান ধাতু যা বিক্রি হয় গ্রাম ওজনে অর্থাৎ বিক্রেতারা  ১ গ্রাম বা আধা গ্রাম ভেজাল করলেই  ক্রেতারা  ঠকবে হাজার হাজার টাকা । গ্রাহকরা যাতে প্রতারিত না হন তা সমাধান করার জন্যই চালু করা হয়েছে হলমার্কিং পদ্ধতি। কারণ সারা পৃথিবীর উন্নত ব্যবস্থার সরকার গুলো  তাদের জনগণ সোনা,রুপার মত মূল্যবান ধাতু কেনাকাটার সময় যাতে না ঠকে এবং  যাতে তাদের স্বার্থ রক্ষা হয় এজন্য কাজ করে।  



হলমার্ক হল বিভিন্ন গহনা এবং মুল্যবান ধাতুর উপর লেজার দিয়ে খোদাই করা

 এক ধরনের চিহ্ন,প্রতীক বা  স্ট্যাম্প যা তার  বিশুদ্ধতার পরিমাণ  এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিবরণ  নির্দেশ করে এবং এই কাজগুলো কোন স্বীকৃত  মূল্যায়নকারী সংস্থা দ্বারা   নিশ্চিত করা হয় যা ঐ দেশের সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা হতে পারে। 


হলমার্কিং কেন করা হয়?


হলমার্কিং ক্রেতাদেরকে গহনা বা মুল্যবান ধাতুটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয় এবং আসল না নকল তা চিহ্নিত করতে সাহায্য করে।


বিভিন্ন গহনা এবং মুল্যবান ধাতুর উপর 

সাধারণত খোদাই করা দুই ধরণের চিহ্ন দেখা যায়। অর্থাৎ দুই ধরনের হলমার্কিং থাকে। 


 প্রথমটি হল গহনা বা মুল্যবান ধাতুটির ধরন অর্থাৎ ধাতুটি  কোন ধরনের স্বর্ণের,রুপার,  না প্লাটিনাম বা অন্য কোন ধাতু এবং সাথে  বিশুদ্ধতার মাত্রা লেখা থাকে অর্থাৎ কত শতাংশ খাদ এবং কত শতাংশ আসল ধাতু। 


দ্বিতীয় হলমার্কিংটি হল গহনা বা মুল্যবান ধাতুটির   নির্মাতা বা উৎসের নাম।অর্থাৎ  নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম বা  কোন দেশের তৈরি। 


 একটি সত্যিকারের হলমার্কিংর জন্য, তাতে অবশ্যই বিশুদ্ধতা উল্লেখ করা থাকতে হবে।  যদি শুধুই  নির্মাতার  নাম উল্লেখ থাকে কিন্তু বিশুদ্ধতার পরিমাণ উল্লেখ  না  থাকে সেটি 

প্রকৃত হলমার্কিং হবে না । 


যেমন, 24-ক্যারেট সোনার একটি বারে যদি  "৯৯৯"হলমার্কিং করে লেখা থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে  এতে ৯৯.৯% খাঁটি সোনা আছে।

একেক দেশের হলমার্কিং সিস্টেম একেক রকম। যেমন , ইংল্যান্ডের  হলমার্কিং সিস্টেমটি Goldsmith company এর  অ্যাসেড Assayed Office,অফিস এর তত্ত্বাবধানে করা হয়।তারা ১৩০০ সাল থেকে ৭০০ বছর যাবৎ বিভিন্ন মূল্যবান ধাতুর উপরে হোল মার্কিং করছে।   ইংল্যান্ডের, হলমার্কে সাধারণত চারটি তথ্য  থাকে:১) উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ,২)বিশুদ্ধতার পরিমাণ, ৩)অ্যাসে অফিস এর নাম,এবং ৪) হল তারিখ।  


বাংলাদেশে হলমার্কিং আছে কিনা?


হলমার্কিং করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের  কোনো প্রতিষ্ঠান নেই এবং কোন নির্দেশনা নেই। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি তাদের নিজেদের মধ্যে হলমার্কিং করার জন্য ২০০৭ সালে ক্যাডমিয়াম পদ্ধতি চালু করে।  তবে ঢাকা, চট্টগ্রামের  নামীদামি প্রতিষ্ঠান এর জুয়েলারি ব্র্যান্ড গুলো নিয়মটি কিছু  মানলেও অন্যরা মানছে না। তাতে অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতারা প্রতারিত হন।



বাংলাদেশে দুটি প্রতিষ্ঠান শুধু সোনার অলংকারে হলমার্ক করে। সেগুলো হল বাংলা গোল্ড ও ঢাকা গোল্ড। জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো  অলংকার তৈরির পর তা বাংলা গোল্ড বা ঢাকা গোল্ডে পাঠায়। তারা সেগুলো পরীক্ষা করে অলংকারে লেজার দিয়ে ২১ বা ২২ ক্যারেট খোদাই করে দেয়। তার সঙ্গে অনেক সময় অলংকারের গায়ে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের পুরো নাম বা আদ্যাক্ষরও থাকে।


হলমার্কের উদ্দেশ্য হল মূলত ভোক্তাদের প্রতারণা থেকে রক্ষা করা এবং গহনা বা মুল্যবান ধাতুটির  গুণমান ও বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা। আশা করি তা বাংলাদেশ এক সময় বাস্তবায়িত হবে এবং ভোক্তা বা ক্রেতারা প্রতারিত হওয়া থেকে বাঁচতে পারবে। 


আজ এই পর্যন্তই!


ভিডিওটি ভালো লাগলে লাইক দিন এবং এইরকম ভিডিও আরো  পেতে চাইলে চ্যানেলটি subscribe করে আমাদের সাথে থাকুন। আল্লাহ হাফেজ। 






No comments:

Post a Comment

আজ আমরা জানব কি কি কাজ করলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি চলে যায়।   জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান মন্ত্রণালয়ে...