আমরা রাস্তায় বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চলতে দেখি যেমন সাদা,কাল, লাল, নীল, চকলেট, ক্রিম,সিলভার বা কারো কোন বিশেষ পছন্দের রং থাকলে গাড়িকে সেই রঙে পরিবর্তন করা যায় কিন্তু আমরা হয়তো চোখের এক পলকের জন্য এই কথা কখনো চিন্তা করি না যে বিমান বা গাড়ির চাকা তাহলে কেন সব সময় কালো হয়? এমনকি একটা সাইকেলের চাকাও সাদা হয় না যেহেতু সাইকেলের চাকা কে সামান্য ওজন বহন করতে হয়। /
আমরা কি জানি গাড়ির প্রথম রাবারের চাকা কখন আবিষ্কার হয়? সময়টা ছিল ১৮৯৫ সাল এবং পৃথিবীর প্রথম রাবারের চাকা সাদাই ছিল যেহেতু রাবারের প্রাকৃতিক কালার হল ধূসর সাদা বা হালকা ক্রিম সাদা।এবং রাবারের ভলকানাইজিং করার পরও রাবারের কালার প্রায় সাদাই থাকে। যেহেতু পৃথিবীর প্রথম রাবার চাকা সাদা ছিল কিন্তু সেই চাকা বেশি টেকসই ছিল না।সেই সময় টায়ারের সাদা রংকে আভিজাত্যের প্রতীক ভাবা হতো।
প্রথম দিকে রাবারের চাকা তৈরির সময় তার স্থায়িত্বকে ধরে রাখার জন্য তার সাথে জিংক অক্সাইড যোগ করা হতো। কিন্তু তারপরও এই জিংক অক্সাইড যুক্ত চাকা রাস্তায় চলার সময় ক্ষয় হয়ে খুব দ্রুত ফেটে যেত এবং বেশি টেকসই ছিল না। এবং এই সাদা চাকার ব্যবহার নিরাপদ ছিল না। /
এরপরে গবেষকরা এরকম একটা চাকা তৈরির জন্য সন্ধান করতে থাকলো যেই চাকা খুব দ্রুত গরম হয়ে দ্রুত ক্ষয় হবেনা টেকসই হবে এবং নিরাপদ ও দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে।
রাবার খুবই নমনীয়, ক্ষয়প্রবণ এবং তাপের প্রতি অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়াশীল। নমনীয় এবং তাপের প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার কারণে অধিক ভারে এবং তাপমাত্রায় রাবারের বিকৃতি ঘট উল্লেখযোগ্যভাবে।/
গবেষকদের গবেষণা সফল হওয়ার পরে ১৯১৭ সাল থেকে টায়ার তৈরিতে কার্বন ব্ল্যাক এর ব্যবহার শুরু হয়। কার্বন-ভিত্তিক পণ্য যেমন কয়লা আলকাতরা ইত্যাদির অসম্পূর্ণ দহনের দ্বারা সৃষ্টি হয় কার্বন ব্ল্যাক।
টায়ার তৈরির সময় রাবারের সঙ্গে কার্বন ব্ল্যাক যোগ করা হয় যা রাবারের তাপ সহনশীলতা বৃদ্ধি করে, ভার বহনে সক্ষম করে এবং ক্ষয়রোধী করে চাকার জীবনকাল বৃদ্ধি করে। চাকা তৈরিতে ৭০ থেকে ৮০% কার্বন ব্ল্যাক ব্যবহার করা হয় সাথে পলিমারও ব্যবহৃত হয়। যার ফলে টায়ারের রং কালো হওয়ায় পাশাপাশি চাকার সাথে রাস্তার ঘর্ষণ কম হয় ফলে কম তাপ উৎপন্ন হয় এবং স্থায়ীত্ব বাড়ে। যার ফলে টায়ারের আয়ু বাড়ে এবং সাদা রং এর টায়ারকে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর ক্রিয়ায় টায়ারকে শক্ত করে যার ফলে টায়ার দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু কার্বন ব্ল্যাক টায়ারকে অতিবেগুনি রশ্মির থেকে রক্ষা করে, যার দ্বারা টায়ারের গুণগত মান অক্ষুণ্ন থাকে। চলন্ত অবস্থায় গাড়ির চাকার যে অংশ বেশি উত্তপ্ত হয় কার্বন ব্লাক সেখানকার তাপমাত্রা কে প্রশমিত করে। /
চাকা উৎপাদনকারী সংস্থা গুলোর দাবি আগে যেসব টায়ারে কার্বন ব্ল্যাক ব্যবহার করা হতো না, সেগুলো ৫ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ভালো অবস্থায় চলত। কার্বন ব্ল্যাক ব্যবহার শুরু করার পর টায়ারগুলো এখন প্রায় ৫০ হাজার কিলোমিটার চলে।অর্থাৎ কার্বন ব্লাক ব্যবহারের পর থেকে চাকার স্থায়িত্ব ১০ গুন বেড়ে যায় যা অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক। এভাবে সাদা রাবারের সাথে কার্বন ব্ল্যাক ব্যবহারের কারণে টায়ারের রং কালো হয়ে যায়।
আজ এই পর্যন্তই!
ভিডিওটিতে একটা like দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন এবং এরকম ভিডিও আরো পেতে চাইলে চ্যানেলটি please subscribe করুন। আল্লাহ হাফেজ। /
No comments:
Post a Comment