আমাদের এই উপমহাদেশের শত শত বছর যাবৎ রান্নায় সরিষার তেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং আমাদের দেশের মানুষ সরিষার তেল দিয়ে রান্না করতে অভ্যস্ত। আমরা এটাকে ক্ষতিকর কিছু মনে করি না।
ভারত, থাইল্যান্ড এবং পাকিস্তানের মতো এশিয়ান দেশগুলি রান্না এবং ভর্তা ভাজির জন্য প্রধানত সরিষার তেলের উপর নির্ভর করে। তবে,অন্যান্য দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ইউরোপের দেশগুলো তাদের দেশে মানুষের ব্যবহারের জন্য এই তেলের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। ইউরোপ, আমেরিকায় সরিষার তেলের বোতলের উপর লেখা থাকে "External use only" অর্থাৎ আপনি বাহিরে প্রয়োগ করতে পারবেন কিন্তু খেতে পারবেন না। //
আমেরিকা , কানাডা এবং ইউরোপের দেশগুলো গবেষণায় পেয়েছে সরিষার তেলে প্রায় ২০-৪০ শতাংশ ইরুসিক অ্যাসিড আছে যা শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি করে। ট্রাইগ্লিসারাইড এর কারণে হৃদপিণ্ডে মারাত্মক ক্ষতি হয়। এছাড়াও ফুসফুসের ক্যানসার ও অ্যানিমিয়া জন্যও এটি দায়ী।দীর্ঘস্থায়ী অ্যানিমিয়া হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিওর এবং অঙ্গের ক্ষতির মতো গুরুতর চিকিৎসা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ প্রশাসনের গবেষণার তথ্য মতে, সরিষার তেলে ইরুসিক অ্যাসিডের পরিমাণ খুব বেশি। এটি এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এটি সঠিকভাবে হজম হয় না এবং মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি করে। ইরুসিক অ্যাসিড স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা সৃষ্টি করে এবং অনেক মানসিক রোগের কারণ।
সরিষার তেলে প্রচুর পরিমাণে ইরুসিক অ্যাসিড থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে বাতের ব্যাথা এবং কিডনিতে পাথরের মতো সমস্যার কারণ হতে পারে। ইরুসিক অ্যাসিড ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়াতে পারে, যা হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ত্বকে সরিষার তেলের অতিরিক্ত প্রয়োগের কারণে চুলকানি হতে পারে। অ্যালাইল আইসোথাওসায়ানেট নামক ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান সরিষার তেলে উপস্থিত থাকে যা ফুসফুসের প্রদাহ এবং গুরুতর গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগের কারণ হতে পারে।
এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘকাল ধরে শরীরে ইরুসিক অ্যাসিড প্রবেশ করলে সেটি হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে এক ধরনের রোগের সৃষ্টি করে, যার নাম মায়োকার্ডিয়াল লিপিডোসিস। শরীরে অল্প মাত্রায় ইরুসিক অ্যাসিড প্রবেশ করলে সেটা নিরাপদ। কিন্তু এর মাত্রা অধিক হলেই বিপজ্জনক হতে পারে মানব শরীরের জন্য।
সরিষার তেলের অতিরিক্ত ব্যবহার বিশেষ করে ছোট শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য ক্ষতিকর।
আমেরিকা,কানাডা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তাই নিষিদ্ধ সরষের তেল। এসব জায়গায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রান্নার কাজে সয়াবিন তেল ব্যবহার করা হয়।
সরিষার তেলেরও অনেক উপকার আছে কিন্তু এটা অতিরিক্ত ব্যবহার করা যাবে না, বেশি খাওয়া যাবে না। যেটুকু ব্যবহার করব সেটুকু বিশুদ্ধ হওয়া উচিত।
এই ভিডিওর ব্যাপারে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে comments করে জানাবেন।
আজ এই পর্যন্তই!
ভিডিওটিতে একটা like দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন এবং এরকম ভিডিও আরো পেতে চাইলে অনুগ্রহ করে চ্যানেলটি subscribe করুন। আল্লাহ হাফেজ।
No comments:
Post a Comment