সোনা পৃথিবীতে বহুলব্যবহৃত ধাতুসমুহের মধ্যে সবচেয়ে পুরনো যা হাজার হাজার বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
স্বর্ণ সংকটকালের বন্ধু হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তা ব্যক্তিগতভাবে হতে পারে বা পারিবারিকভাবে হতে পারে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে হতে পারে। যেমন আপনি একজন ব্যক্তি, ব্যক্তি হিসেবে আপনার কাছে স্বর্ণ জমা আছে সংকটের সময় সেই স্বর্ণকে আপনি ব্যবহার করতে পারেন। ঠিক সেরকম ভাবে পরিবারের কাছেও যদি এরকম স্বর্ণ জমা থাকে প্রয়োজনে, সংকটে, বিপদে সেই পরিবার তার জমানো স্বর্ণকে খরচ করতে পারে। ঠিক একইভাবে যুগ যুগ ধরে যে কোনো রাষ্ট্রও তার সংকটের কথা চিন্তা ভাবনা করে, তার দেশের অর্থনীতি যাতে ভালো চলে এবং ভবিষ্যৎ যুদ্ধ বিগ্রহ, বিপদ ইত্যাদির কথা চিন্তা করে স্বর্ণ জমা করে। যে দেশের কাছে যত স্বর্ণ তারা সেই স্বর্ণকে বিপদের সময় বিক্রি করে, বন্ধক রেখে তার অর্থনীতিকে সচল রাখে মুদ্রাস্ফীতি এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এইজন্য বলা হয় মন্দা বা অর্থনৈতিক সংকটের সময় সোনায় বিনিয়োগ ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে একটা প্রতিবন্ধক হিসাবে কাজ করে।
মার্কিন ডলারের সাথে সোনার বিপরীত সম্পর্ক দ্বারা সোনার গুরত্ব বুঝা যায়। যখন ডলারের মূল্য হ্রাস পায়, তখন সোনার মূল্য বৃদ্ধি পায়।
রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর কাছে মূল্যবান সোনার মজুদ রয়েছে ৩৫ হাজার টনেরও বেশি। পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত খনি থেকে যত স্বর্ণ উত্তেলিত হয়েছে তার পাঁচ ভাগের একভাগের বেশি সোনা বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুলির কাছে জমা আছে। ।
বর্তমানের ও ভবিষ্যতের বিভিন্ন সংকটময় পরিস্থিতিতে মুদ্রাবাজারের গতিনির্ধারক হয়ে উঠবে স্বর্ণ। এইজন্য রিজার্ভে স্বর্ণের মজুদ ক্রমেই বাড়িয়ে তুলছে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী , ২০২৩ সালে বিশ্বে বেশি স্বর্ন মজুদকারি দেশ হিসেবে যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্য থেকে র্যাংকিং এ প্রথম ২০ টি দেশের কাছে কি পরিমান স্বর্ণ মজুত আছে তার একটা হিসাব বলবো। এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কি পরিমাণ সোনা মজুদ আছে এবং তার প্রতিবেশীদের থেকে বাংলাদেশের পার্থক্য কতটুকু তাও বলবো।
স্বর্ণ মজুদে সারা পৃথিবীতে যে দেশটি এক নম্বর বা বিশ্বে প্রথম সে দেশটি হলো আমেরিকা, আমেরিকার কাছে ৮১৩৩ টন স্বর্ণ মজুদ আছে। বিশাল মজুদ।
দ্বিতীয় স্থানে আছে জার্মানি। জার্মানির কাছে ৩৩৫২ টন স্বর্ণ মজুদ আছে। এখানে দেখা যায় যে জার্মানি আর আমেরিকার মধ্যে ব্যবধান অনেক।
তৃতীয় স্থানে আছে ইতালি যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ২৪৫১ টন।
চতুর্থ স্থানে আছে ফ্রান্স যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ২৪৩৬ টন।
পঞ্চম স্থানে আছে রাশিয়া, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ২৩৩২ টন।
ষষ্ঠ স্থানে আছে চীন যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ২২৩৫ টন।
সপ্তম স্থানে আছে সুইজারল্যান্ড, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ১০৪০ টন।
অষ্টম স্থানে আছে জাপান, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৮৪৫ টন।
নবম স্থানে আছে ভারত, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৮১৫ টন।
দশম স্থানে আছে নেদারল্যান্ড, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৬১২ টন।
১১ তম স্থানে আছে তুরস্ক, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৫৪০ টন।
দ্বাদশ তম স্থানে আছে তাইওয়ান, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৪২৩ টন।
১৩ তম স্থানে আছে পর্তুগাল, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৩৮২ টন।
১৪ তম স্থানে আছে উজবেকিস্তান, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৩৭১ টন।
১৫ তম স্থানে আছে পোল্যান্ড, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৩৫৮ টন।
১৬ তম স্থানে সৌদি আরব,যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৩২৩ টন।
১৭ তম স্থানে আছে ইংল্যান্ড, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৩১০ টন।
১৮ তম স্থানে আছে কাজাখস্তান, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ২৯৪ টন।
১৯ তম স্থানে আছে লেবানন, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ২৮৬ টন।
২০ তম স্থানে আছে স্পেন, যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ২৮১ টন।
স্বর্ণ মজুদের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ, যার স্থান র্যানকিং এ ৬০ এর পরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে স্বর্ণের পরিমাণ ১৪ টন।
দক্ষিণ এশিয়া দেশ গুলির মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় হল ভারতের ৮১৫ টন তুলনামূলকভাবে খারাপ অবস্থান বাংলাদেশের ১৪ টন। বাংলাদেশের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ২২ টন। এবং পাকিস্তানের যার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৬৬ টন।
নেপালের স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৮ টন।
আর শ্রীলংকার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৭ টন।
বিশাল জনসংখ্যার দেশ এবং তার ব্যয় হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে খারাপ।
আজ এই পর্যন্তই!
ভিডিওটিতে একটা like দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন এবং এরকম ভিডিও আরো পেতে চাইলে অনুগ্রহ করে চ্যানেলটি subscribe করুন। আল্লাহ হাফেজ
No comments:
Post a Comment